সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় এখন বোরো ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ চলছে পুরোদমে। তবে শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটার কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। এ ছাড়া ঝড়-বৃষ্টি ও বজ্র্রপাতের কারণেও ধান কাটা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও শ্রমিক সংকটের কারণে ধানের বাম্পার ফলনের পরও স্বস্তিতে নেই কৃষক।
কৃষকরা জানান, বিগত বছরগুলোতে ধান কাটার সময় ময়মনসিংহ, রংপুর, কিশোরগঞ্জ, জামালপুরসহ বিভিন্ন এলাকার শ্রমিকেরা ধান কাটার জন্য আসতেন। কিন্তু এ বছর ওইসব জেলার শ্রমিকদের দেখা মিলছে না। তাই এ বছর ধান কাটা নিয়ে শ্রমিক সংকটে পড়তে হয়েছে এই এলাকার কৃষকদের। এ ছাড়া ঝড়ের কারণে পড়ে যাওয়া ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। শ্রমিক সংকটের কারণে সময়মতো তারা ধান ঘরে তুলতে পারছেন না। যে সব স্থানীয় শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে, তাদের দ্বিগুণ পারিশ্রমিক দিতে হচ্ছে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে উপজেলার দুটি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়নে ১২ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষি অফিসের পরামর্শে সঠিক সময়ে চারা লাগানো, নিবিড় পরিচর্যা, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, যথাসময়ে সেচ দেওয়া এবং সার সংকট না থাকায় উপজেলার কৃষকরা উফসী ব্রি ধান-২৮, ২৯, ৫০, ৬৬, ৬৭, ৭৪ ও ৮১ এবং স্থানীয় জাতের ধান চাষ করেছেন। এবার বিঘাপ্রতি ২৬-২৭ মণ হারে ধান উৎপাদন হয়েছে।
বগাদী গ্রামের কৃষক মোস্তফা ও শহীদুল্লা জানান, বলেন, এ বছর জমিতে বোরো ধানের ফলন ভাল হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০ ভাগ ধান কাটতে পেরেছি। শ্রমিক না পাওয়ায় এখনো ৭০ ভাগ জমির ধান মাঠে পড়ে আছে। এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগের আতঙ্ক রয়েছে।
ফতেপুর এলাকার কৃষক সানাউল্লাহ জানান, তিনি ১৫ বিঘা জমিতে এবার বোরো আবাদ করেছিলেন। প্রতি বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করতে খরচ হয়েছিলো আনুমানিক ১৩ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় ফলন আশা করে ছিলেন ২৬ থেকে ৩০ মণ ধান। কিন্তু সমস্যা একটাই ধান কাটার শ্রমিক সংকট। তাছাড়া পরিবহন খরচও আছে। এত চড়া দামে ধান কাটলে আমাদের ক্ষতি হবে এ বছর।
শ্রমিক সংকটের কথা স্বীকার করে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন জানান, আগের বছরের চেয়ে এবার বোরো ধানের ফলন তুলনামূলকভাবে ভালো হয়েছে। এরপরও কৃষকদের ধান কাটতে হবে। এছাড়াও খামার যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প” এর ২য় পর্যায়ের উন্নয়ন সহায়তার ভর্তুকি মূল্যে এসিআই এর কম্বাইন হারভেস্টার একটি ধান কাটার যন্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে। এটি দিয়ে মাহমুদপুর ইউনিয়নের স্বল্প খরচে ধান কাটকে পারবে। পরবর্তীতে অন্যান্য ইউনিয়নের এ যন্ত্রটি সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে।